/ YouTube Videos

Myanmar Civil War & Rohingya Crisis

আট রোহিঙ্গা যুবক। থাকেন নোয়াখালীর ভাসানচরে। বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপ। কাজের অভাব যেমন আছে তেমনই আছে টাকার অভাব। আট রোহিঙ্গা যুবকের পরিকল্পনা, যেভাবেই হোক, মূলভূখন্ডে পৌঁছতে হবে। নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে নদীতে সাঁতার কেটে প্রথমে তারা পৌছায় সন্দ্বীপ উপকূলে । সেখান থেকে পায়ে হেঁটে গুপ্তছড়া ঘাট। ঘাট থেকে যাত্রীবাহী জাহাজে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড। পথে কেউ ধরে ফেলবে এই ভয়ে যথা সম্ভব পায়ে হেটেছে তারা। কোনো উপন্যাসের রোমাঞ্চকর অভিজানের ঘটনা নয় এটি। রাষ্ট্রহীন, দেশহীন হতভাগা হাজার হাজার রোহিঙ্গা যুবকের স্বপ্নভঙ্গের গল্পগুলো এমনই।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আগমন

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট, ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়া সীমান্ত। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিশাল এক মানবিক সংকট প্রত্যক্ষ করে বিশ্ব। ঘরহারা পাখির মত লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। ঘরবাড়ি থেকে মিয়ানমার সরকার তাদেরকে উচ্ছেদ করে। অনেক সীমাবদ্ধতা ও সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মত ছোট্ট ভূখন্ডে গড়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির । গত ৬ বছর ধরে কক্সবাজার ও ভাসানচরে বসবাস করছে রোহিঙ্গারা। সংখ্যাটা বিশাল। ৬ বছর আগে যে সংখ্যাটা ছিলো ৮ থেকে দশ লাখ এখন তা ১২ থেকে ১৪। ভুটানের জনসংখ্যার চেয়েও বিশাল এই সংখ্যা।

গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকে মায়ানামারে ফেরত পাঠানো যায়নি। দেনদরবার হয়েছে অনেক। ছলাকলায় অভ্যস্ত মিয়ানমার বারবার বাংলাদেশকে মূলা দেখিয়েছে। কিন্তু কত দিন? বাংলাদেশ আর কত দিন এই ভার বইবে? রোহিঙ্গারা কী আদৌ ফিরে যাবে? নাকি কক্সবাজার জেলাটাই চলে যাবে রোহিঙ্গাদের দখলে? একটা কথা স্বরণ করিয়ে দিতে চাই, উখিয়া ও টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বর্তমানে ১১লাখ ১৮হাজার ৫৭৬ জন। আর এই জনসংখ্যা পুরো কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের চেয়েও অনেক বেশি। দিন যত বাড়ছে , রোহিঙ্গা অধ্যুশিত এলাকা গুলোতে কমছে স্থানীয়দের প্রভাব।

বাংলাদেশ কী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারবে?

সঙ্গত কারণেই বলা যায়, বাংলাদেশ দীর্ঘ বছর ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারবে না। সেই বাস্তবতা বাংলাদেশের নেই, আগামীতেও থাকবেনা। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যে কেবল ২০১৭ সালেই বাংলাদেশে ঢুকেছে তা নয়। রাজনৈতিক, সামাজিক ও তীব্র বৈষম্যের শিকার রোহিঙ্গারা বেশ কয়েকবার বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। ১৯৪২ সাল থেকে এ পর্যন্ত এরকম চারটি বড় আকারের অনুপ্রবেশ সংঘটিত হয়েছে। ১৯৭৮ সালে প্রায় দুই লক্ষ, ১৯৯১-৯২ সালে আড়াই লক্ষ, ২০১৬ সালে প্রায় ১ লক্ষ এবং সর্বশেষ ২০১৭ -২০১৮ সালে কমপক্ষে সাত লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এর আগে প্রত্যাবাসনের কারণে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বিভিন্ন সময় হ্রাস পেলেও ২০১৭ সাল থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার এখনো ফিরিয়ে নেয়নি।

এখনও পর্যন্ত ফিরিয়ে নেয়ার কার্যকর কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছেনা। সত্যি কথা বলতে, সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের কোনো ইচ্ছে নেই বলেই মনে হচ্ছে। তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাড়িয়ে দিতে চেয়েছে এবং সেটা তারা করেছে। আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক ভাবে মিয়ানমারকে বাধ্য করা না গেলে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে না। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হলেও মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অস্পষ্ট। দৃশ্যমান কোনো বিরধ না থাকলেও মায়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব ভারসম্যপূর্ণ নয়। যে কারণে বাংলাদেশও মিয়ানমারকে বাধ্য করতে পারছে না। আর যাদের পক্ষে মিয়ানমারকে বাধ্য করা সম্ভবব তারাও এটা করছেনা।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভূ-রাজনীতি

ঘটনাবহুল পৃথিবীতে একটার পর একটা ইস্যু তৈরি হয়। নতুন ইস্যুতে চাপা পরে যায় পুরাতন ক্ষত। বিশ্ব মোড়লদের নজর এখন ইউক্রেন-রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে। রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিক আলোচনায় উঠে আসতে পারছে না। এই দায় কিছুটা রোহিঙ্গাদেরও। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আন্দোলন–সংগ্রাম গড়ে তুলতে পারেনি। তারা তাদের মুক্তি ও স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করতে পারেনি। আন্দোলন-সংগ্রামতো দূরের কথা ক্যাম্পে নিদারুণ কষ্টের মধ্যে বসবাস করলেও নিজদেশে ফেরার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহও দেখাচ্ছেন না রোহিঙ্গারা। নাগরিকত্ব ও রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি, নিজস্ব ঘরবাড়ী সম্পত্তি ফেরত, নিরাপত্তা এবং নির্যাতনের বিচারের দাবি পূরণ না হলে দেশে ফিরে যাওয়ার কনো পরিকল্পনা নেই তাদের।

২০১৭ সালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক অভিবাসনের পর, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে প্রত্যাবাসনের দুটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা হয়েছিল। উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন করে নিপীড়ন হতে পারে এই আসঙ্কায় রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তাহলে কোন পক্রিয়ায় রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যাবে? কোনো দেশকী মিয়ানমারকে বাধ্য করতে পারবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে?

চীনের ভূমিকা

মিয়ানমারের উপর যদি এখন কোন দেশের প্রভাব থেকে থাকে তাহলে সেটা চীনের । কিছুটা প্রভাব রাশিয়ারও আছে। তবে সেটা চীনের তুলনায় কম। ভারতেরও কিছুটা প্রভাব মিয়ানমারে আছে বলে মনে করা হয়। বিশ্ব মোড়ল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো বড় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার প্রতিটিতেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে চীন। যেগুলোর কোনটিই সফল হয়নি। চীন আদৌ এই সমস্যার সমাধান করতে ভূমিকা রাখতে পারবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এজন্য যেসব কঠোর পদক্ষেপ ও প্রভাব মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বেইজিংকে নিতে হবে তা চীন চাইবে কিনা সেটিই একটি বড় প্রশ্ন।

চীন চাইছে ছোট ছোট পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে অল্প কিছু রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে। কিন্তু এভাবে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। প্রতীকী পাইলট প্রত্যাবাসন, বিশাল সাগরে এক ফোঁটা পানির মতো। এ ধরণের পদক্ষেপের মাধ্যমে চীন আসলে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে মিয়ানমারের একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এখন বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে প্রত্যাবাসনের আরও একটি চেষ্টা চালাচ্ছে চীন। আর এ উদ্দেশ্যে চীনের এশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত দেং সিজুন কয়েক দফা বাংলাদেশ সফর করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

তবে পুরো পরিস্থিতিকে ভিন্নভাবে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারে সেনা শাসনের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি মনে করে, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের অভাবের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য এখনও সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়নি। যেহেতু পরিবেশ এখনও সহায়ক নয়, ফলে প্রত্যাবাসন হলে তা টেকসই হবে না। যেমন– সত্তর ও নব্বই দশকে রোহিঙ্গারা ফেরত গেলেও মূল সমস্যার সমাধান না হওয়ায় তারা আবার বিতাড়িত হয়েছে নিজ ভূমি থেকে। তবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানের কারণ আসলে ভূ-রাজনৈতিক।

বেইজিং চাইছে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অল্প করে হলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু হোক। চিনের ধারণা রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হলে পশ্চিমারা এ অঞ্চলে আরও সক্রিয় হতে পারে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, রোহিঙ্গা সংকট যত দীর্ঘায়িত হবে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের অবস্থান এ অঞ্চলে তত দৃঢ় হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের রাজনীতি

এখানে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বেশি সক্রিয় হলে তা চীনের জন্য অস্বস্তির হবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ‘বার্মা অ্যাক্ট’-এর আওতায় বড় ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিলে চীন এ অঞ্চলে নাকানি চুবানি খাবে। এ কারণে চীন চাইছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান।

একইসাথে বেইজিং কোনোভাবেই মিয়ানমারকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে না। ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে চীনের কাছে মিয়ানমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। ২০১৩ সালে চীনের বিশ্বব্যাপী নতুন ভূকৌশলগত পরিকল্পনা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে মিয়ানমার বঙ্গোপসাগরের তীর অঞ্চল বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া মিয়ানমারে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ রয়েছে। যদিও মিয়ানমারে চীনের মোট বিনিয়োগের পরিমাণ কৌশলগত কারণে খুব গোপন। এখন, কোনো কারণে যদি মিয়ানমার মার্কিন বলয়ে চলে যায় তাহলে ঝুঁকিতে পড়বে চীনের বিনিয়োগ। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে তাই চীনকে দুই দিক থেকেই ভাবতে হচ্ছে।

ভারতের ভূমিকা

চীনের মত মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সরাসরি সমর্থন না করলেও এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত মিয়ানমারকে কোনো রকম চাপে ফেলতে চাইছেনা।

ভূরাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারতও মিয়ানমারের পক্ষ নিয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তসংলগ্ন ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে ভারতের তিনটি রাজ্য মনিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামের বিদ্রোহ দমন করতে মিয়ানমারের সহযোগিতা বিশেষভাবে প্রয়োজন ভারতের। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে সমর্থন না করে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়ালে, ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে যে কোনো বিশৃঙ্খলা ভারতের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় কৌশলগত কারণেই ভারত মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছে।

রাশিয়ার ভূমিকা

মিয়ানমারের উপর রাশিয়ার প্রভাব অপরাপর রাষ্ট্রদুটির তুলনায় কম নয়। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে রাশিয়াও মিয়ানমারকে দৃশ্যমান কোনো চাপে ফেলতে পারবে না। মিয়ানমারে অস্ত্র রপ্তানিতে রাশিয়া এখন চীনের পরেই। রাশিয়া শুধু মিয়ানমারের অস্ত্রের বাজারের দিকেই নয়, রাশিয়া মিয়ানমারে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির চুক্তি করে ফেলেছে। মিয়ানমারের তেল-গ্যাসের ভাণ্ডারের মুনাফায় নিজের আধিপত্য রাখতে রাশিয়ার সরকারি কোম্পানি ‘গাজপ্রম’ রাজধানী ইয়াঙ্গুনে একটি অফিসও খুলে ফেলেছে। এমন অবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও অর্থনৈতিক সুবিধা আদায় করার প্রতিযোগিতায় রাশিয়া কিছুতেই মিয়ানমারের সাথে ঝামেলায় জড়াতে চাইবে না।

মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক অবস্থাও এখন টালমাটাল। এতটাই টালমাটাল যে মিয়ানমার রাষ্ট্র কয়েকভাগে ভাগ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। সম্প্রতি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিশাল আকারের ভূখণ্ড হারানোর পর এই সম্ভাবনা এখন প্রবল। যে কারণে মিয়ানমারের জনগণকে সামরিক বাহিনীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিও মহা দুশ্চিন্তার কারণ।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশের বিড়ম্বনা

মূলত চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও রাশিয়ার ভূরাজনৈতিক স্বার্থ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে প্রধান অন্তরায়। ছয় বছর হতে চলল, বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। কবে নেবে, তারও কোনো রূপরেখা নেই। বাংলাদেশ কীভাবে এদের ফেরত পাঠাবে, সেটাও অস্পষ্ট। এভাবে চলতে থাকলে রোহিঙ্গা সংকট ছাপিয়ে আভ্যন্তরিণ সংকটে পরে যেতে পারে খোদ বাংলাদেশ। ইতমধ্যেই নানা সমস্যায় জর্জরিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। একদিকে যেমন তরতরিয়ে বাড়ছে রহিঙ্গাদের সংখ্যা, অন্যদিকে বৈশ্বিক সহায়তাও কমে যাচ্ছে । চলতি বছরেই রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা ৩৩ শতাংশ কমে গেছে। এই মুহুর্তে ৪৫ শতাংশ রোহিঙ্গা পরিবার পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না। খাদ্যের অভাবে, কাজের অভাবে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরছে তারা। মাঝে মাঝেই হতাহতের ঘটনা শোনা যায় ক্যাম্পগুলোতে। রোহিঙ্গা সংকট মোটেই হালকা ভাবে নেয়ার মত কোনো বিষয় নয়। সময় থাকতে এখনই বাংলাদেশকে উদ্যোগী হতে হবে। কেবল মিয়ানমার কিংবা চীনের দিকে তাকিয়ে না থেকে বাকি দেশগুলোর সাথেও আলোচনা বাড়াতে হবে। মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে। মোদ্দা কথা, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যত দ্রুত সম্ভব নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।

Search of Mystery

Search of Mystery

A YouTube channel representing Bangladesh and bringing mysteries behind the stories. We're activists and defenders of the truth.

Read More