/ YouTube Videos

What Do We Really Want in Life? The Depths of Human Psychology

Transcript:

Restaurant এর মেনুর চেয়ে ভয়ঙ্কর জিনিস সম্ভবত পৃথিবীতে আর নেই! ঘাবড়াবেন না দয়া করে। ভয়ঙ্কর এই ব্যাপারটি ঘটে তখন, যখন আমি কোন restaurant এ খেতে যাই। মেনুগুলো যখন আমার সামনে আসে আমি তখন এলোমেলো হয়ে যাই। এটা এমন নয় যে আমি আমার জন্য ভুল কোনো মেনু অর্ডার করতে ভয় পাচ্ছি। মাঝে মাঝে আমার মনে হয়, যে প্রতিটি খাবারের স্বাদ কেমন তা যদি জানা যেত তাহলে আমি নিশ্চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম।

সত্যি বলতে কী, আমাদের জীবনটাও এমন। আমরা সব সময় নিশ্চিন্ত হতে চাই। আমরা চাই আমাদের পছন্দ, আমাদের সিদ্ধান্তগুলো যেন আমাদের বিপদে না ফেলে। মানুষের আমরণ তৃষ্ণা, আকাঙ্ক্ষা তাঁর আশেপাশের সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করার, সে দুনিয়াটাকে তার ইচ্ছে মতন সাজাতে চায়। কিন্তু সবকিছু কারো পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। আমরা কোনো ভাবেই এই সত্যটাকে মেনে নিতে পারিনা। সত্যি বলতে মানুষ নিজেকেই নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

ফ্রয়েডের মনোবিশ্লেষণের তত্বে দুটি প্রধান বিষয় আছে। তার মতে, মানুষিক জীবনের বেশিরভাগ অংশই ঘটে আমাদের সচেতনতার বাইরে বা unconsciously, এবং দ্বিতীয়টি ঘটে অতীতের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে, বিশেষ করে শৈশবকালে। অর্থাৎ আমরা আমাদের ইচ্ছার খুব সামান্য অংশই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।

স্রষ্ঠা একমাত্র আমাদেরকেই Free will বা স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে জগতে পাঠিয়েছেন। এই কারণেই আমরা যে যত উপরে পৌঁছাই, সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার এই তাড়না তাঁর তত বেশী বাড়তে থাকে। পৃথিবীর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের দিকে তাকালে তা আরও স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারবেন।

আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, মানুষ তাহলে আসলে কী চায়? তার এই স্বাধীন ইচ্ছার কী কোন সীমা-পরিসীমা নেই? হ্যাঁ, আছে। মানুষ যুক্তি দিয়ে তার এই স্বাধীন ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। স্রষ্ঠা যেমন মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছার ক্ষমতা প্রদান করেছেন তেমনই তাঁকে যুক্তির কাঠগড়ায় দাড় করিয়েছেন । এই যুক্তি বা বিবেকই মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করে। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, আমরা কেবল বিবেকহীন মানুষকেই সীমা অতিক্রম করতে দেখেছি।

একজন ব্যক্তির বিবেক জীবনের প্রথম দিকেই বিকাশ লাভ করে যা সে শেখে তার পিতামাতা, শিক্ষক এবং অন্যদের কাছ থেকে । শৈশব তাই Mental development এর জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্রয়েডের মতে আমাদের মানসিকতা তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রথমটি আমাদের আদিম বা সহজাত প্রবৃত্তি, দ্বিতিয়টি ইগো এবং তৃতীয়টি সুপারইগো। এই তিন এর মধ্যেও সচেতন এবং অচেতন উপাদান রয়েছে। অর্থাৎ আমরা অবচেতনেও হিংসাত্বক হতে পারি, আবার ভালো-ও বাসতে পারি। যখন কোন ব্যাক্তির ব্যক্তিত্বের এই তিনটি অংশই ভারসাম্যের মধ্যে থাকে, তখন ব্যক্তিকে মানসিকভাবে সুস্থ বলে মনে করা হয়। আবার যদি কেউ এই তিনের মধ্যস্থতা করতে অক্ষম হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে মানুষটি একটি ভারসাম্যহীনতা বা মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে আছে।

মানুষের ইচ্ছা বা আকাঙ্খা মূলত মৌলিক শারীরবৃত্তীয় প্রয়োজনীয়তা থেকে মানসিক এবং মনস্তাত্ত্বিক আকাঙ্ক্ষায় পরিণত হয় । মনোবিজ্ঞানী আব্রাহাম মাসলো চাহিদার একটি শ্রেণীবিন্যাস মডেল- Maslow’s hierarchy of needs প্রস্তাব করেছেন, বেঁচে থাকার জন্য মৌলিক চাহিদা যেমন, খাদ্য বা বাসস্থান থেকে

উচ্চ-স্তরের চাহিদা যেমন প্রেম আর সম্মানের দিকে ধাবিত হয়। এই কাঠামোটি নির্দেশ করে যে মানুষের ব্যক্তিগত আকাঙ্খা এবং স্ব-তৃপ্তি অর্জনের চেষ্টা করার সাথে সাথে ইচ্ছাগুলি কিভাবে বিকশিত হয়। অর্থাৎ কোন মানুষ যখন একটি পরিবারের কতৃত্ব লাভ করে তখন তার গোত্রের নেতা হওয়ার আকাঙ্খা জাগে, তারপর সমাজের এবং এক পর্যায়ে সে একটি দেশের নেতৃত্বও পেতে চায়।

ফ্রি উইল যে সব সময়ই হিটলার , মুসোলিনিদের জন্ম দিয়েছে তা কিন্তু নয়। মনবিজ্ঞানীরা ইচ্ছাকে দুই ভাবে ভাগ করেছেন। বলা হয়ে থাকে Human desires are rooted in our evolutionary history. Human desire ব্যাক্তি থেকে গোটা একটি সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে। পৃথিবীতে যত বিপ্লব হয়েছে তার সবই প্রবল ইচ্ছা শক্তির ফল।

আমাদের ইচ্ছের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ যেমন আমাদের হাতে নেই, তেমনই সময়ের নিয়ন্ত্রণও আমাদের হাতে নেই। সময়ের বলয় আমাদের নিয়ন্ত্রণের ঊর্ধ্বে। কিন্তু তবুও মানুষ সময়কে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তা টাইম ট্রাভেলের অদম্য ইচ্ছে হোক অথবা নিজের যৌবন ধরে রাখার তাড়না, আমাদের এক সময় মেনে নিতেই হয় যে - প্রকৃতির বেঁধে দেওয়া এই অটোমেশনের বাইরে গিয়ে কিছু নিয়ন্ত্রণ অনেক দূরের কথা, আমরা আমাদের বুড়িয়ে যাওয়া শরীর বা মনকেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা।

সময় মানেই শুধু বর্তমান। কারণ আমাদের অতীত আর ভবিষ্যতের কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। এই মুহূর্তের কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আমাদের থাকতে পারে, তবে তাও দ্রুত ফসকে যাচ্ছে। ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে আপনি যত নেক্রপলিসের সন্ধান পাবেন, তারা কখনো মেনে নিতে পারেনি যে তাদের সময় একদিন শেষ হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, তাদের কেউ কেউ তাদের ফ্রি উইলকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। সেক্ষেত্রে প্রাচীন মিশরীয় ফারাওদেরে কথা আপনারা সবাই জানেন। দূর প্রাচ্যের টেরাকোটা আর্মির নেপথ্যের কারণও জানা আছে আনেকের।

ঘটনাটি চীনের। ১৯৭৪ সালে এক কৃষক একটি কুয়া খুঁড়তে গিয়ে কিছু প্রাচীন মাটির তৈরি তৈজসপত্র খুজে পান। এরপর আরও খুঁড়তে গিয়ে সে খুঁজে পায় ২২০০ বছরের পুরনো প্রথম টেরাকোটা বা পোড়ামূর্তির যোদ্ধা। তারপরে যা সামনে এলো তা রীতিমতো পুরো পৃথিবীকে হতবাক করে দিলো। চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াং আট হাজারেরও বেশি এই টেরাকোটা আর্মিদের মূর্তি তৈরি করেছিলেন। একতিভূত চীন সম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট ছিলেন তিনি। বিশাল এক সম্রাজ্যের পাশাপাশি তার রাজত্বে বেশ অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জিত হয়েছিল। কিন্তু তাতে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। অসীম ক্ষমতার পাশাপাশি সময়কেও পরাজিত করতে চেয়েছিলেন তিনি। তিনি চেয়েছিলেন তার কোন ইচ্ছাই অপূর্ণ থাকবে না, তিনি চেয়েছিলেন কোন দিন মৃত্যু তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। তার এই চিন্তা তাকে অত্যাচারী বানিয়েছিল। বিনা দোষে তিনি অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছিলেন। অমরত্ব চাইলেও মৃত্যুকে খুব ভয় পেতেন তিনি। সে বিশ্বাস করতো যাদের সে হত্যা করেছে, সেইসব মানুষের মৃত আত্মারা তার মৃত্যুর পরে প্রতিশোধ নিতে আসবে। আর এই ভয়ে সম্রাট কিন শি হুয়াং তার পরবর্তী জীবনে সঙ্গ দেওয়ার জন্য টেরাকোটা আর্মি তৈরি করেছিলেন। তার এই সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য ছিল পরকালে সম্রাটকে রক্ষা করা এবং তার সেবা করা। ক্ষমতার লোভে মানুষ কত অত্যাচারী হতে পারে তা ভাবুন এইবার।

যাহোক, অনেকক্ষণ তো বক বক করলাম! এইবার বলুন, আপনি কী চান? স্বাধীন ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান? না কি তাকে লাগামহীন ভাবে ছুটতে দেবেন? সময়েই থামবেন না কী সময়কে অতিক্রম করতে গিয়ে নিজেকে ধ্বংশ করে ফেলবেন।

Search of Mystery

Search of Mystery

A YouTube channel representing Bangladesh and bringing mysteries behind the stories. We're activists and defenders of the truth.

Read More