/ YouTube Videos

One Hack That Exposed Millions of Cheating Husbands

একটি হ্যাকে বেরিয়ে পড়ে পরকীয়ারত ৩ কোটি ৭০ লাখ পুরুষের গোপন তথ্য

২য় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটলেও থেমে যায়নি যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের শীতল যুদ্ধ। গোপনে গোপনে ১৯৬২ সালে আমেরিকার দিকে তাক করে কিউবায় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বসায় সোভিয়েত ইউনিয়ন। সম্ভ্যব্য পারমাণবিক যুদ্ধের সেই ভয়াবহতা থেকে আমেরিকাসহ পুরো বিশ্বকে রক্ষা করেছিলেন আমেরিকার ৩৫ তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি।

সুদর্শন এই প্রেসিডেন্ট যেমন তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধি দিয়ে গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে সমাদর পেয়েছিলেন একই সাথে তার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য বারবার সমালোচনার শিকার হয়েছেন। মৃত্যুর পরে, কলেজের ছাত্রী, হলিউডের নায়িকা থেকে শুরু করে হোয়াইট হাউসের কর্মী পর্যন্ত বেশ কয়েকজন মহিলা অভিযোগ করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্ট কেনেডির সাথে তাদের বিয়ে বহিঃর্ভুত সম্পর্ক ছিল। এদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিলেন হলিউড অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো। যদিও ব্যাপারটি কখনই নিশ্চিত করা যায়নি এবং মনরোর জীবনীকার ডোনাল্ড স্পোটোর মতে, এই জুটির মাত্র চারবার দেখা হয়েছিল।

জর্জ ডব্লিউ বুশের বাবা, যুক্তরাষ্ট্রের ৪১ তম প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ বুশের জীবনের সাথেও জড়িয়ে আছে এমন তিক্ত এক অভিজ্ঞতা। জর্জ এইচ বুশ ও তার স্ত্রী বারবারা বুশের ৭৩ বছরের বৈবাহিক জীবন অনেকটা পরিচ্ছন্ন মনে হলেও, বারবারার আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে এক নতুন তথ্য। ৭০ এর দশকে বেশকয়েকবার আত্ম হত্যার চেষ্টা করেছিলেন বারাবারা। স্বামী জর্জ এইচ.ডব্লিউ. বুশের ব্যক্তিগত সহকারী জেনিফার ফিটজগেরাল্ডের (jennifer fitzgerald) সাথে অবৈধ প্রেমের সম্পর্কের ব্যাপারে জানতে পেরে মানসিক ভাবে ভেঙে পরেছিলেন বারবারা। এক্ষেত্রে আপনাদের স্মৃতিতে আরও একজন বিখ্যাত চরিত্রের কথা জেগে উঠতে পারে। সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদও কিন্তু কম রোমান্টিক ছিলেন না। তার বৈধ, অবৈধ প্রেমের নানা গল্প এখনও যে কোনো সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে।

প্রেসিডেন্ট কেনেডি কিংবা এরশাদ নয়, বিভিন্ন সময় এক্সট্রা ম্যারিটাল অ্যাফিয়ারে জড়িয়েছে খেলার মাঠের তারকা থেকে শুরু করে অভিনয় জগতের জনপ্রিয় ব্যক্তিরা। ভারতের ক্রিকেটার দিনেস কার্তিক থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়ান বলার ব্রেট লি কিংবা বলিউডের অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন বা হ্নতিক রোশান। এদের সবাইকে নিয়েই গুঞ্জন উঠেছে পরকীয়ার। তবে সবসময় এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এ তো গেল সমাজের উঁচুস্তরের কথা। সাধারণ মানুষও কিন্তু এই সম্পর্কের বাইরে? পরকীয়া বলুন বা বিয়ে বর্হিভূত সম্পর্ক, এখন তো এগুলো চালানোর জন্য রীতিমতো ডেটিং সাইট চালু হয়েছে। ভাবছেন, বাংলাদেশ সম্ভবত এসব থেকে কিছুটা হলেও দূরে আছে? না, গত কয়েক বছর ধরে এই ঢেউ এসে লেগেছে বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীর মধ্যেও। এখন অনেকেই এসব ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে সঙ্গী খুঁজতে শুরু করেছেন।

আট বছর আগে আনিশা আর নাদিরের বিয়ে হয়েছিলো মহা ধুমধামে। সঙ্গত কারণেই আমরা মেয়েটির আসল নাম ব্যবহার করছিনা। আনিশার স্বামী নাদির একজন নেভিগেটর। যে কারণে বছরের বেশীরভাগ সময় নাদিরকে সমুদ্রেই থাকতে হতো। বিয়ের প্রথম কয়েক বছর একপ্রকার কেটে গেলেও একটা সময় দুরত্ব বাড়তে থাকে । তাঁরা দুজনই সম্মত হন, এই পরিস্থিতি একটি সুস্থ সম্পর্কের জন্য অনুকূল নয়। বিয়ের দুই বছরে তাদের একটি সন্তান হয়েছে। সাংসারিক ব্যয় মেটাতে নাদির তার চাকরি ছাড়তে পারেনি, আনিশাও চাপ দিতে পারেনি।

এভাবেই নাদির এবং আনিশা একটা সময় মানসিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। মহামারী এবং ফলস্বরূপ লকডাউনের সময় তাদের দুরত্ব আরও প্রকট হয়ে ওথে। দীর্ঘ এক বছর এই দম্পতি একে অপরের সাথে দেখা কিংবা কথা বলেননি। একপর্যায়ে আনিশা তার একাকিত্ব কাটাতে ডেটিং সাইটের শরণাপন্ন হয়।

ডেটিং সাইটে একাধিক পুরুষের সাথে যোগাযোগ হয় আনিশার। শেষমেষ একজনের সাথে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। তাদের সম্পর্ক এখন দুই বছরেরও বেশি পুরানো এবং আনিশার কাছে এই সম্পর্কটা অনেক বেশী তাৎপর্যপূর্ণ। দীর্ঘ এই সময়ে নাদির কখনও ভাবেননি তার স্ত্রী অন্য একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পরেছে। আনিশাও তার বিশেষ বন্ধুকে নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে পাশে পাবেন তাকে। কিন্তু তেমনটা হলো না, অবস্থা বেগতিক দেখে কেটে পরলো আনিশার বিশেষ বন্ধু। লজ্জায়, অবহেলায় ভাগ্যাহত আনিশা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ল। তারপর কী হলো তা দর্শক অনুমান করতে পারছেন। নানা আসঙ্কা থাকা স্বত্বেও ক্রমবর্ধমান ভাবে বাড়ছে বিয়ে বহির্ভুত সম্পর্ক। ডেটিং অ্যাপের মোড়কে এই সম্পর্ক এখন আরও সহজ ও নিরাপদ। আমাদের দেশে এখনও প্রতিষ্টিত কোনো পরিসংখ্যান নেই, কিন্তু পাশের দেশের পরিসংখ্যান দেখলে সহজেই অনুমান করা যায়।
ফ্রান্স ভিত্তিক বিবাহ বহির্ভূত ডেটিং অ্যাপ গ্লিডেন জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী ১০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী গ্লিডেন ব্যবহার করছে। এর মধ্যে ২০% বা প্রায় ২ মিলিয়ন ব্যবহারকারী ভারতের, এর মধ্যে ৩৫% এরও বেশি মহিলা। কোম্পানির মতে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সংখ্যাটি ১১ শতাংশ বেড়েছে। বিভিন্ন ধরণের ডেটিং আপ চালু আছে বিশ্বব্যাপী। এদের মধ্যে বেশ কইয়েকটি অ্যাপকে নারী বান্ধব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশেষত কর্মজীবি নারী ও পুরুষেরাই এসব সাইটে গোপন সম্পর্ক নিরাপদে চালু রাখেন। বলা হয়ে থাকে এসব সাইটে আপনি চাইলে আপনার তথ্য গোপন রেখেই সম্পর্কে জড়াতে পারবেন। সঙ্গত কারনেই সেসব সাইটের নাম আমরা বলছিনা। তবে আসলেই কী তাদের কাছে আপনার তথ্য গোপন থাকে?

কেমন হবে, যদি আপনার এক্সট্রা ম্যারিটাল অ্যাফিয়ারের কথা আপনার স্ত্রী জেনে যায়। যে সম্পর্ক আপনি সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে চাচ্ছিলেন সেটা যদি সবার সামনে চলে আসে!

চলুন তাহলে, আজকের পর্বে আমরা তেমনি এক ডেটিং সাইটের গল্প শুনি, যেখানে আপনাকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে যে আপনার তথ্য গোপন রাখা হবে। কিন্তু অবশেষে সেটা তাঁরা করেনি। মাত্র একবার হ্যাক করেই ৩৭ মিলিয়ন পুরুষের গোপন সম্পর্কের কথা গোটা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ।

আলোচিত এই সাইটের নাম অ্যাশলে ম্যাডিসন। ২০০১ সালে কানাডিয়ান উদ্যোক্তা নোয়েল বিটারম্যান এই সাইটটি প্রতিষ্ঠা করেন। যেটি ছিল বিবাহিত মানুষের ডেটিং সাইট। ডেটিং না বলে চিটিং বলা যেতে পারে। ২০০২ সালে থেকে এটি তার কার্যক্রম শুরু করে। যার ট্যাগ লাইনটি ছিল দুর্দান্ত, "Life is short. Have an affair." - (‘জীবন সংক্ষিপ্ত, একটা প্রেম করুন’)। আর এই স্লোগানই সাইটটিকে বিশ্বের বিবাহিত পুরুষদের কাছে এক নাম্বার সাইটে পরিণত করে।

তবে এত এত ডেটিং অ্যাপের মধ্যে অ্যাশলে ম্যাডিসনের এত উন্নতি করার মূল কারণ ছিল এর একটি ফিচার। এই সাইটে বলা হয় আপনি চাইলে আপনার সব তথ্য মুছে ফেলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে আলাদা অর্থ গুনতে হবে। এই বিষয়টিই ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে। কারণ যে চিট করে, তার সবচে বড় ভীতি থাকে ধরা পড়ার।

অ্যাশলে ম্যাডিসনের মূল প্রতিষ্ঠান হলো রুবি লাইফ। ২০০২ সাল থেকে ৮০ মিলিয়নের বেশি মানুষ এখানে সাইনআপ করে। প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার মানুষ নতুন সদস্য হয়। প্রায় ৭০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর কাছ থেকে বার্ষিক 28 মিলিয়ন ডলার আয় করে সাইটটি। আর এভাবেই বিশ্বের ১৩ তম লাভজনক ডেটিং অ্যাপে পরিণত হয়েছে অ্যাশলে ম্যাডিসন।

এটি মূলত পুরুষদের কাছ থেকেই চার্জ নিয়ে থাকে। তবে কেন মানুষ একটি ডেটিং ওয়েবসাইটের জন্য এত টাকা দিতে ইচ্ছুক? এর প্রধান কারণ আপনি আপনার নিজের পরিচয় গোপন করেই এখানে একাউন্ট চালাতে পারবেন। এমনকি এখানে আপনার সম্পূর্ণ তথ্য বা চ্যাট মুছে ফেলার বাটন রয়েছে। তবে আপনি ডিলিট করলেও যাবতীয় তথ্য ওয়েবসাইটের ডাটাবেজে থেকে যায়। তবে অ্যাশলে ম্যাডিসন এখানে সবার থেকে ভিন্ন। আপনি টাকা দিয়ে ডাটাবেজ থেকেও সব তথ্য মুছে ফেলতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ১৯ ডলার দিতে হবে।

এভাবে ব্যবহারকারী এক প্রকার নিশ্চিত হয় যে তাদের তথ্য আর কারোর কাছে নেই। তবে এখানেও একটা কিন্তু থেকে যায়। অ্যাশলে ম্যাডিসনের কাছে আপনার তথ্য না থাকলেও তার মূল সংস্থা রুবি লাইফের কাছে ব্যবহারকারীর তথ্য থেকেই যায়।

আর ঝামেলাটা বাঁধে এখানেই। ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই, হ্যাক হয়ে যায় সাইটটি। গ্রাহকদের নাম, ইমেইল, বাড়ির ঠিকানা, তাদের যৌন কল্পনা এমনি ক্রেডিট কার্ডের তথ্য বের হয়ে আসে। মূলত হ্যাকাররা সাধারণ মানুষের তথ্য প্রকাশ করতে চায়নি। তারা চেয়েছিল বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে প্রশ্রয় দেওয়া এই ওয়েবসাইট বন্ধ হোক। ওয়েবসাইটকে তারা প্রথমে হুমকিও দিয়েছিল যে মানুষের সাথে এই প্রতারণা বন্ধ করতে। কিন্তু অ্যাশলে ম্যাডিসন কথা শোনেনি - যেহেতু তারা তাদের ইউজারদের প্রাইভেসির চেয়ে নিজেদের ব্যবসায়িক লাভেই বেশি মনোযোগী ছিলো। আর এটাই তাদের পতন বয়ে আনে। তারপরেই ২২ জুলাই ডার্ক ওয়েবে ফাঁস হয়ে ১০ গিগাবাইট ডাটা যার মাঝে চিটিং জামাইদের গোপন সব তথ্য বেরিয়ে আসে, ভেঙে যায় লাখ লাখ সংসার।

ঐ বছর আগস্টের শেষে নোয়েল বিডারম্যান যিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন তিনি পদত্যাগ করতে সম্মত হন। তারা তাদের ট্যাগ লাইন থেকেও সরে আসে। তবে এত কিছুর পরেও অ্যাশলে ম্যাডিসন বন্ধ হয়ে গেছে এমন কিন্তু না। তবে এটা তার গ্রাহকের বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়।

তবে অবাক করা ব্যাপার হলো আমাদের এই সমাজের। মাত্র একটা ওয়েবসাইট হ্যাক করে ৩৭ মিলিয়ন চিটিং হাজবেন্ডের সন্ধান পাওয়া গেছে। যারা রীতিমতো তাদের স্ত্রীর সাথে থেকেও আরেকটি সম্পর্কে জড়িয়েছে। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে এই সংখ্যা অনেক বেশি। পৃথিবীর প্রায় ৫৩ টি দেশের মানুষ রয়েছে এই সাইটেই। তাহলে! আমাদের সম্পর্কগুলো আসলে কোথায় গিয়ে ঠেকছে! এই পৃথিবীতে আপনি আসলে কাকে বিশ্বাস করবেন। আপনার প্রিয় মানুষকে নাকি আপনার নিজেকে?

ইন্টারনেটে একটি ভুল ক্লিক হতে পারে অনেক ভয়ংকর। ক্ষণিকের প্রলোভনে বদলে যেতে পারে আপনার জীবন। ভালোবাসার সম্পর্কগুলোকে সম্মান করতে হবে। বিশ্বাস অর্জন করা অনেক কঠিন কিন্তু মুহূর্তেই তা নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে, আর এই অপবাদ রয়ে যেতে পারে জীবনভর। পরকীয়ার পেছনে কী কী কারণ থাকতে পারে বলে আপনার ধারণা? আশলে মেডিসনকে কী আপনি খারাপ বলবেন নাকি বা চিটিং হাসব্যান্ডদের? ডার্ক ওয়েব এর এই হ্যাকার গ্রুপ - ইমপ্যাক্ট টিম কি এখানে বাহবা পাওয়ার মতো কাজ করেছে নাকি এতগুলো সংসার ভেঙে দিয়ে ভালো করেনি তারা? আপনার মতামত জানান কমেন্টসে। ডার্ক ওয়েব নিয়ে যদি আরও জানতে চান, দেখে ফেলুন আমাদের আগের ভিডিওটি। অথবা দেখতে পারেন ডিভোর্স এর ভিডিওটিও। চয়েস ইস ইয়োর্স।

Search of Mystery

Search of Mystery

A YouTube channel representing Bangladesh and bringing mysteries behind the stories. We're activists and defenders of the truth.

Read More